ল্যাপটপ কাজের ক্ষেত্রে এবং দৈনন্দিন জীবনের নানা প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আমরা অনেকেই ল্যাপটপ ব্যবহার করি। ল্যাপটপে স্মার্টফোনের মতো দীর্ঘ সময় চার্জ থাকে না বললেই চলে তবে স্মার্টফোনে যতটা চার্জ থাকা প্রয়োজন ল্যাপটপে তার থেকে বেশি চার্জ থাকা প্রয়োজনে বিশেষ করে আমরা যারা ল্যাপটপ দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করি।
তবে মোটামুটি ভালো মানের ল্যাপটপ ব্যবহার করেও বেশিরভাগ ল্যাপটপ ব্যবহারকারীরা ঠিকমতো ব্যাটারি ব্যাকআপ পায়না। বিশেষ করে কাজের ক্ষেত্রে ল্যাপটপে বেশি ব্যাটারি ব্যাকআপ এর প্রয়োজন হয়। যদি চার্জে লাগানোর ব্যবস্থা থাকে তাহলে ব্যাটারি ব্যাকআপ নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করতে হয় না।
কিন্তু আপনি এমন জায়গায় বসে যদি কাজ করেন যেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ বা ল্যাপটপে চার্জ দেয়ার মত ব্যবস্থা নেই সেখানে অবশ্যই আপনাকে ব্যাটারি ব্যবহার করে ল্যাপটপ দিয়ে কাজ করতে হবে। ল্যাপটপে কাজের ক্ষেত্রে অনেক ভারী সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয় সেগুলো দ্রুত চার্জ শেষ করে দেয়।
তবে কাজের ক্ষেত্রে আপনি যদি বড় সাইজের কোন সফটওয়্যার ব্যবহার করেন তাহলে সেটি ব্যবহার বন্ধ করা তো আর সম্ভব নয়। তবে আপনি মাল্টিটাস্কিং কমাতে পারেন। অর্থাৎ প্রয়োজন না হলেও একসাথে বেশি সফটওয়্যার বা প্রোগ্রাম অন রাখবেন না।
এতে আপনার ল্যাপটপের ব্যাটারির চার্জ দ্রুত শেষ হয়ে যায় তা হয়তো আপনি অবশ্যই বুঝতে পারেন। এছাড়াও ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে যদি কাজ করার প্রয়োজন হয় তখন ল্যাপটপের চার্জ অনেক দ্রুত শেষ হয়ে যায়। কিন্তু আপনার কার্যক্রম যদি ইন্টারনেটে হয় তাহলে সেটি তো বন্ধ করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে আপনি যদি ওয়াইফাই ব্যবহার করেন তাহলে ল্যান্ড লাইন ওয়াইফাই ব্যবহার করতে পারেন এতে ওয়াইফাই এডাপ্টার এর উপরে কোন চাপ পড়বে। ফলে ব্যাটারি ব্যাকআপ দীর্ঘ সময় পাবেন।
আর যদি আপনি মডেম ব্যবহার করে ইন্টারনেটে কাজ করেন তাহলে তো এর বিকল্প কিছু নেই তবে এক্ষেত্রে আপনি ফোনের ডাটা ক্যাবলের মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারেন এতে কিছুটা বাড়তি ব্যাটারি ব্যাকআপ পাবেন।
এছাড়াও আপনার ল্যাপটপের অপ্রয়োজনীয়' প্রোগ্রাম এবং সফটওয়্যার গুলো আনইন্সটল এবং ডিলিট করে দিলে বেশি ব্যাটারি ব্যাকআপ পাবেন বলে আশা করা যায়। এছাড়াও স্ক্রিনের ব্রাইটনেস এবং স্পিকারের সাউন্ড কমিয়ে ব্যবহার করতে পারেন এতে কিছুটা হলেও আপনার চার্জ সাশ্রয় হবে।
আর ব্যাটারি স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কখনোই 20% এর নিচে চার্জ থাকলে ল্যাপটপে কোন কাজ করবেন না এবং যত দ্রুত সম্ভব ল্যাপটপ বন্ধ করবেন এবং কাজ শেষে চেষ্টা করবেন ল্যাপটপ বন্ধ অবস্থায় ফুল চার্জ করার জন্য। তবে ল্যাপটপে কাজ করা অবস্থায় চার্জ দিলে তেমন কোন সমস্যা হয়না তাই এই বিষয়টি ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।
তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটি সেটি হচ্ছে ল্যাপটপে আপনি কোন অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করছেন। বেশির ভাগ মানুষই বর্তমানে উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার করে যা অনেক ভারী এবং লো কনফিগারেশনের ল্যাপটপের জন্য খুবই ক্ষতিকারক বলা যায়। তবে এই কথা শুনে আপনি হয়তো ভাবছেন যে উইন্ডোজ ৭ ব্যাবহার করবেন।
কিন্তু আমার ব্যক্তিগত মতামত অনুযায়ী উইন্ডোজের কোন ভার্সনে তেমন একটা ভাল না। উইন্ডোজ আপনার ব্যাটারি তৈরি করার পাশাপাশি আপনার র্যাম এবং প্রসেসর এর উপরে অনেক প্রেশার সৃষ্টি করে। ফলে এটা স্বাভাবিক যে আপনার ল্যাপটপের আয়ু ধীরে কমে যাবে।
আরো পড়ুন… বৈদ্যুতিক গাড়ি বানানোর লক্ষ্যে কাজ করছে এখন হুয়াওয়ে
আমার ব্যক্তিগত সাজেশন হচ্ছে লিনাক্সের ডিস্ট্রো ব্যবহার করা তবে সেটি হতে পারে আপনার পছন্দের যেকোন ডিস্ট্রো। তবে সবচেয়ে হালকা এবং কম ব্যাটারি খরচ করে তেমন কিছু ডিস্টো আপনি খুঁজে নিতে পারেন। উদাহরণ স্বরূপ Linux mint cinnamon এটা খুবই জনপ্রিয় সুন্দর একটি ডিস্টো।
তবে কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম ব্যাটারি ব্যাকআপ এর ক্ষেত্রে অনেক প্রভাব ফেলে এবং সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তবু আমি কেন শুরুতেই এটি উল্লেখ করলাম না সেটাই হয়তো ভাবছেন আপনারা। আসলে সবার কাজের ধরন একরকম নয় আলাদা আলাদা মানুষের আলাদা আলাদা কাজের জন্য বিভিন্ন রকম সফটওয়্যার এর প্রয়োজন হয় যা সবগুলো লিনাক্স ডিস্ট্রো গুলোতে সাপোর্ট করবে না।
যদিও উইন্ডোজ সফটওয়্যার লিনাক্স এর ডিস্ট্রো গুলোতে ইন্সটল করা যায়। তবে কম্পিউটারে অপারেটিং সিস্টেম নির্বাচন করার সম্পূর্ণ আপনার নিজের পছন্দের উপর নির্ভর করে তাই এ বিষয়ে আমি আপনাকে কোনটাই ব্যবহার করতে বলবো না কিন্তু কোনটা ব্যবহার করা উচিত বিশেষ করে ব্যাটারি ব্যাকআপ এর জন্য সেটাই উল্লেখ করছি।
লিনাক্স ডিস্ট্রো গুলোতে Adobe সফটওয়্যার গুলোর সাপোর্ট নেই বা সরাসরি ইন্সটল করা যায় না বলে অনেকেরই সমস্যা হয়। কারণ অসংখ্য মানুষের Adobe এর সফটওয়্যার গুলো নানা রকম কাজে ব্যবহার করতে হয়।
তাই আপনার পছন্দ যে আপনি উইন্ডোজ বাদ দিয়ে লিনাক্স ডিস্ট্রো গুলো ব্যবহার করবেন কিনা। লিনাক্স ডিস্ট্রো ব্যবহার করার সুবিধা এবং উইন্ডোসের অসুবিধা গুলো নিয়ে অন্য একটি পোস্টের বিস্তারিত আলোচনা করব আজ এ পর্যন্তই।
ভালো থাকবেন লিনাক্স সম্পর্কে জানতে আগ্রহী থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে আমাদের জানাবেন এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ পোস্ট করা হবে।